নিরক্ষীয় রেখার ৫ থেকে ৩০ ডিগ্রী আর ক্রান্তি অঞ্চলে ১৫ থেকে ৩৫ ডিগ্রী উত্তর দক্ষিণে বজ্রপাত একটি স্বাভাবিক ঘটনা। আর এই অঞ্চলে হওয়ায় ভৌগলিক কারণেই বজ্রপাতের সঙ্গে পরিচিত এদেশের মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্ট ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে বাংলাদেশে গড়ে ৮০ থেকে ১২০ দিন বজ্রপাত হয়। মার্চ থেকে মে পর্যন্ত প্রতি বর্গ কিলোমিটার এলাকায় প্রায় ৪০টি বজ্রপাত হয়।
তবে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে এর মাত্রা বিশেষ করে শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে এর মাত্রা অনেক বেশি। দুর্যোগ ফোরামের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫ সালে বজ্রপাতে ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে মে মাসেই মৃত্যু হয়েছে ৯১ জনের। চলতি বছর এপ্রিল পর্যন্ত এই সংখ্যা ৪৮ জন।
সবশেষ বৃহস্পতিবার একদিনেই মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৩০ জন।
জলবায়ু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো. আবদুর রব বলেন, ‘আমরা আধুনিক লাইফস্টাইলে, কম্পিউটার, মোবাইল ফোনের মতো টেকনোলজি ব্যবহার করছি। এর ফলে পজিটিভ নেগেটিভ চার্জের বিনিময়কে সহজ করছে।
আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুর রহমান খান বলেন, বজ্রপাতের কারণ হিসেবে সূর্যের অবস্থান একটা ফ্যাক্টর। যে সকল ক্রাইটেরিয়ার জন্য বজ্রপাত হচ্ছে, সেই ক্রাইটেরিয়ার রিজিওন-ই এটা।
এদিকে বেশ কয়েক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো চূড়ান্ত হয়নি বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে বিবেচনা করার বিষয়টি। পাশাপাশি এ সংক্রান্ত সচেতনতার বিষয়টিও গুরুত্ব পাওয়া উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
জলবায়ু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো. আবদুর রব বলেন, ‘বিদ্যুতের ধর্মই হচ্ছে সবচেয়ে উঁচু খুঁটিকে প্রথমে স্পর্শ করে। সুতরাং বজ্রপাতের সময় শুয়ে পড়তে হবে। লোহার সামগ্রীর পরিবর্তে প্লাস্টিক ব্যবহার করতে পারি। বৈদ্যুতিক খুঁটির নিচে দাঁড়ানো যাবে না।’
ঢাবি’র দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবা নাসরিন বলেন, ‘প্রচার মাধ্যমে বা গণমাধ্যমে বজ্রপাত নিয়ে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান, আলোচনা কম হয়। এটাকে একটা দুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিত করে বজ্রপাত মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।’
