তবে সর্বাবস্থায় কবরের সাথে বিশেষ সম্পর্কে বজায় থাকে।
শাইখ শিহাবুদ্দিন সুহরওয়ার্দী (রহঃ) রচিত সুপ্রসিদ্ধ আওয়ারিফুর মা আরিফ গ্রন্থের অনুবাদ গ্রন্থ মিসবাহুল হিদায়েত এর ১৬৫ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে- অতএব বান্দা যেমন আল্লাহ তাআলাকে সর্বাবস্থায় গুপ্ত ও ব্যক্ত যাবতীয় বিষয়ে অবহিত জ্ঞান করে থাকে, হুযুর আলাইহিস সালামকেও তদ্রূপ জাহিরী ও বাতিনী উভয় দিক থেকে হাযির জ্ঞান করা বাঞ্ছনীয়; যাতে তাঁর আকৃতি বা সুরত দেখার ধারনা, হার-হামিশা তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও তার দরবারের আদব রক্ষার দলীলরূপে পরিগনিত হয়, বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীন দিক থেকে তার বিরুদ্ধাচরনে লজ্জাবোধ হয় এবং তার পবিত্র সহচর্যের আদব রক্ষা করার গৌরব লাভের সুবর্ণ সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়।
সু-প্রসিদ্ধ ফিকহ শাস্ত্র বিশারদ ও উলামায়ে উম্মত এর উপরোক্ত উক্তি সমূহ থেকে হুযুর আলাইহিস সালামের হাযির-নাযির হওয়ার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রমানিত হল। এখন আমি আপনাদেরকে জানাতে চাই, একজন নামাজীর নামাজ পড়ার সময় হুজুর আলাইহিস সালাম এর সম্পর্কে অন্তরে কি ধারনা পোষন কর উচিত। এ প্রসঙ্গে আমি অত্র পরিচ্ছেদের প্রারম্ভে সুবিখ্যাত গ্রন্থ দুররুল মুখতার ও শামী থেকে উদ্ধৃত পেশ করছি। অন্যান্য বুজুর্গানের দ্বীনের আরও কিছু বক্তব্য শুনুন এবং নিজ নিজ ঈমানকে তাজা করুন।
আশআতুল লমআত গ্রন্থের কিতাবুস সালাত এর তাশাহুদ অধ্যায়ে ও মাদারেজুন নবুয়াত গ্রন্থ ১ম খন্ডের ১৩৫ পৃষ্টায় ৫ম অধ্যায়ে হুযুর আলাইহিস সালাম এর ফযায়েল এর বর্ণনা প্রসঙ্গে শাইখ আবদুর হক মুহাদ্দিছ দেহলবী (রহঃ) বলেছেন-
কোন কোন আরিফ ব্যাক্তি বলেছেন- তাশাহুদে আসসালামু আলাইকুম আইয়ুহাননবী বলে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের) কে সম্বোধন করার রীতির এ জন্যই প্রচলন করা হয়েছে যে, হাকীকতে মুহাম্মদ্দীয় (মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাহিস সালাম এর মৌল সও্বা) সৃষ্টিকুলের অনু-পরমানুতে এমনকি সম্ভবপর প্রত্যেক কিছুতেই ব্যাপৃত। সুতরাং হুজুর আলাইহিস সালাম নামাযীগনের সও্বার মধ্যে বিদ্যমান ও হাযির আছেন। নামাযীর এ বিষয়ে সচেতন হওয়া বা এ বিষয়ের প্রতি অমনোযোগী না হওয়াই বাঞ্চনীয়, যাতে নামাযী নৈকটের নূর লাভে ও মারেফতের গুপ্ত রহস্যাবলী উন্মোচনে সফলকাম হতে পারে।
সুবিখ্যাত ইহয়াউল উলুম গ্রন্থ ১ম খন্ডের ৪র্থ অধ্যায়ে ৩য় পরিচ্ছেদে নামাযের বাতেনী শর্তাবলীর বর্ননা প্রসঙ্গে ইমাম গাযযালী (রহঃ) বলেন-
وَلَحْضِرْ فِىْ قَلْبِكَ النَّبِىُّ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَشَخْصَهُ الْكَرِيْمُوَقُلْ اَسَّلَامُ عَلَيْكَ اَيُّهَاا لنَّبِىُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرْكَاتُهُ
নবী আলাইহিস সালাম তথা তার পবিত্র সও্বাকে নিজ অন্তরে হাযির জ্ঞান করবেন ও বলবেন আসসালামু আলাইকা আইয়ুহাননাবীউ ওয়া রহমতুল্লাহি ওায়া বারাকাতুহু। (হে নবী আপনার উপর শান্তি রহমত ও বরকতের অমৃতধারা বর্ষিত হোক। (মিরকাত গ্রন্থের তাশাহুদ শীর্ষক অধ্যায়েও এ রকম উক্তি বর্ণিত আছে- مسك الختام নামক গ্রন্থের ২৪৩ পৃষ্ঠায়ও ওহাবীমতাবলী নবাব সিদ্দিক হুসেন খান ভূপালী সে একই কথা লিখেছেন যা আমি ইতোপূর্বে আশআতুল লমআত এর বরাত দিয়ে তাশাহুদ প্রসঙ্গে লিখেছি যে, নামাযীর তাশাহুদ পাঠের সময় হুযুর আলাইহিস সলামকে হাযির-নাযির জেনেই সালাম করা চাই। তিনি উক্ত গ্রন্থে নিম্নোল্লিখিত দুটি পংক্তি সংযোজন করেছেনঃ-
প্রেমের রাস্তায় দূরের বা কাছের কোন ঠিকানা নেই। আমি তোমাকে দেখি ও দোয়া করি।
চলমান—-
