আল্লামা শাইখ মুজাদ্দিদ (রহঃ) বলেনঃ-
নামাযে হুযুর আলাইহিস সালামকে সম্বোধন করা হয়েছে। এটা যেন এ কথারই ইঙ্গিত বহ যে, আল্লাহ তার হাবীবের উম্মতদের মধ্যে নামাযীদের অবস্থা তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাহিস সালাম) এর কাছে এমনভাবে উদ্ভাসিত করেছেন, যেন তিনি তাদের মধ্যে উপস্থিত থেকেই সব কিছু দেখতে পাচ্ছেন, তাদের আমল সমূহ অনুধাবন করছেন। এ সম্বোধনের আরও একটি কারণ হচ্ছে তার এই উপস্থিতির ধারনা অন্তরে অতিমাত্রায় বিনয় ও নম্রভাব সৃষ্টি করে।
হাযির-নাযির এর এ মাসআলার সহিত ফিকাহ শাস্ত্রের কয়েকটি মাসায়েলের সমাধানও সম্পৃক্ত। যেমন ফকীহগণ বলেন স্বামী যদি পৃথিবীর পূর্বপ্রান্তে থাকে আর স্ত্রী রয়েছে পশ্চিম প্রান্তে। এমতাবস্থায় স্ত্রী একটি স্ন্তান প্রসব করল এবং স্বামী সেই শিশুটি তার বলে দাবী করল। তাহলে শিশুটি তারই সাব্যস্ত হবে। কারণ স্বামী আল্লাহ ওলী হতে পারেন এবং কেরামতের বদৌলতে স্ত্রীর কাছে পৌছতে পারেন। ফতওয়ায়ে শামী ২য় খণ্ডের ثبوت النسب অধ্যায় দ্রষ্টব্য ।
ফতওয়ায়ে শামী ৩য় খণ্ডের অধ্যায়ে কারামাতে আওলিয়া বিষয়ক র্ব্ণনায় উল্লেখিত আছেঃ
এ দূরত্ব অতিক্রম করাটা সে একই কেরামতের অন্তর্ভুক্ত। এটা এজন্য সম্ভবপর যে হুযুর আলাইহিস সালাম ইরশাদ করেছেন, আমার জন্য পৃথিবীকে সঙ্কুচিত করে দেয়া হয়েছিল। এতে ফকহিগণের নিম্নোক্ত মাসআলাটিরও সমাধান হয়ে যায়। মাসআলাটি হলঃ পৃথিবীর পূর্বপ্রান্ত অবস্থানকারী কোন ব্যাক্তি যদি পশ্চিম প্রান্তে অবস্থানকারী কোন মহিলাকে বিবাহ করেন এবং সে স্ত্রীর সন্তান ভূমিষ্ট হয় তাহলে শিশুটি উক্ত স্বামীর বলে গণ্য হবে। তাতারখানিয়া নামক গ্রন্থে আছে যে, এ মাসআলাটিও কেরামত এর বৈধতাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে।
সে একই জায়গায় শামীতে আরও উল্লেখিত আছেঃ
সেটাই যা ইমাম নাসাফী (রহঃ) একটি প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল কথিত আছে যে কাবা শরীফ কোন এক ওলীর সহিত সাক্ষাত করার জন্য গমনাগমন করে-এ কথ বলাটা জায়েয হবে কিনা? এর উত্তরে তিনি বলেছেন আওলিয়া কিরামের দ্বারা কেরামত হিসেবে অস্বাভাবিক ও ব্যতিক্রমধর্মী কার্যাবলী সম্পাদন আহলে সুন্নাতের মতে জায়েয।
এ উদ্ধৃতি থেকে জানা গেল যে, পবিত্র কাবা মুয়াজ্জমাও আওলিয়া কিরামের যিয়ারতের উদ্দেশ্যে পৃথিবীতে ঘুরাঘুরি করে থাকে ।
তাফসীরে রুহুল বয়ানে সুরা মুলক এর শেষে উল্লেখিত আছেঃ
قَالَ الْاِمَامُ الْغَزَالِىُّ وَالرَّسُوْلُ عَلَيْهِ السَّلَامَ لَهُ الْخِيَارُ فِيْ طَوَ افِ الْعَالَمِ مَعَ اَرْوَاحِ الصَّحَابَةِ لَقَدْرَاَهُ كَثِيْرٌ مِنَ الْاَوْلِياءِ
ইমাম গাযযালী বলেছেন সাহাবায়ে কিরামের রূহসমেত হুযুর আলাইহিস সালামের জগতে পরিভ্রমণের ইখতিয়ার আছে, বিধায় অনেক আওলিয়া কিরাম তাকে দেখেছেন।
انتباه الاذكياء فى حياة الاولياء নামক গ্রন্থের ৭ পৃষ্ঠায় আল্লামা জালালুদ্দিন সয়ুতী (রহঃ) বলেন-
উম্মতের বিবিধ কর্ম-কাণ্ডের প্রতি দৃষ্টি রাখা তাদের পাপরাশির ক্ষমা প্রার্থনা করা তাদেরকে বালা মাসিবত থেকে রক্ষা করার জন্য দুআ করা পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত আনাগোনা করা ও বরকত দান করা এবং নিজ উম্মতের কোন নেক বান্দার ওফাত হলে তার জানাযাতে অংশ গ্রহণ এগুলোই হচ্ছে হুযুর আলাইহিস সালাম এর সখের কাজ। কোন কোন হাদীছ থেকেও এসব কথার সমর্থন পাওয়া যায়।
