পিনিউজ ডেস্ক:
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মারা গেছেন(ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)।।
শনিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব খন্দকার ইয়াসির আরেফীন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “হার্ট অ্যাটাক করে তার মৃত্যু হয়েছে।”
৭৪ বছর বয়সী শেখ আবদুল্লাহ টেকনোক্র্যাট হিসেবে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছিলেন।
তার মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের সাবেক ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ আব্দুল্লাহ গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন।
গোপালগঞ্জ-৩ (টুঙ্গীপাড়া-কোটালীপাড়া) আসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংসদীয় প্রতিনিধি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের সময় শেখ আবদুল্লাহকে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী করেন শেখ হাসিনা।
শেখ আব্দুল্লাহর জন্ম ১৯৪৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ জেলার কেকানিয়া গ্রামে। চার ভাই, তিন বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়।
স্থানীয় গওহরডাঙ্গা হাফেজিয়া মাদ্রাসা থেকে কোরআনে হেফজের মাধ্যমে শিক্ষা জীবন শুরু করেন তিনি। এরপর একই মাদ্রাসার কওমী ধারায় পড়াশোনা করেন।
১৯৬১ সালে মেট্রিক, ১৯৬৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ১৯৬৬ সালে বি কম (অনার্স) ডিগ্রি নেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭২ সালে এম কম এবং ১৯৭৪ সালে অর্থনীতিতে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭৭ সালে ঢাকা সেন্ট্রাল ‘ল’ কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রিও নেন শেখ আবদুল্লাহ।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বুধবার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ।
শিক্ষা জীবন শেষে সুলতানশাহী কেকানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও অ্যাডভোকেট হিসেবে গোপালগঞ্জ জজ কোর্ট ও ঢাকা জজ কোর্টে প্র্যাকটিস করেন।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে ছাত্রজীবনেই রাজনীতির সাথে যুক্ত হন আবদুল্লাহ। খুলনার আযম খান কমার্স কলেজ সংসদের প্রথম নির্বাচিত এই ভিপি ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলনেও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির নেতৃত্বে তিনি আওয়ামী যুব লীগে যোগ দেন। গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী যুব লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিরও দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এরপর কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়া এই রাজনীতিক ১৯৭১ সালে মুজিব বাহিনীর সাথে সম্পৃক্ত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।
দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও রাজনীতিতে ঝুঁকে পড়েন শেখ আবদুল্লাহ। দীর্ঘদিন গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে আওয়ামী লীগের বিগত কেন্দ্রীয় কমিটিতে ধর্ম বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
